কালিজিরার গুণাগুন

Technology bangla
Health tips


  বহু প্রাচীনকাল থেকেই কালজিরা মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় চৌদ্দশত বছর আগে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন, ‘‘কালজিরা রোগ নিরাময়ের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তোমরা কালজিরা ব্যবহার কর, নিশ্চয়ই প্রায় সকল রোগের নিরাময় ক্ষমতা এর মধ্যে নিহিত রয়েছে।’’ সেজন্য যুগ যুগ ধরে পয়গম্বরীয় ঔষধ হিসেবে সুনাম অর্জন করে আসছে। তৎকালীন সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম চিকিৎসাবিজ্ঞানী ইবনে সিনা তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘কানন অব মেডিসিন' এ বলেছেন, ‘‘কালজিরা দেহের প্রাণশক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে।’’ কালজিরাতে প্রায় শতাধিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এর প্রধান উপাদানের মধ্যে প্রোটিন ২১%, শর্করা ৩৮%, স্নেহ ৩৫%। এছাড়াও রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। প্রতি গ্রাম কালজিরায় যে সমস্ত পুষ্টি উপাদান রয়েছে তার নিম্নরূপ-
প্রোটিন-২০৮ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১৫ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন২-১.০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি৬-৫ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন-৫৭ মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম-১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম, আয়রন-১০৫ মাইক্রোগ্রাম, ফসফরাস-৫.২৬ মি. গ্রা., কপার-১৮ মাইক্রোগ্রাম, জিংক-৬০ মাইক্রোগ্রাম, কোলাসিন-৬১০ আইউ।
কালজিরার গুণের শেষ নেই। প্রতিদিন সকালে এক চিমটি কালজিরা এক গ্লাশ পানির সঙ্গে খেলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ভেষজবিদরা কালজিরাকে বিভিন্ন রোগের ঔষুধ হিসেবে অভিহিত করেছেন- হাঁপানি রোগীদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় দীর্ঘদিন কালজিরা সেবনে উপকার পাওয়া যায়। কালজিরা হরমোন সমৃদ্ধ হওয়ায় পুরুষত্ত্বহীনতায় বা নারী পুরুষের যৌন অক্ষমতায় নিয়মিত কালজিরা সেবনে যৌনশক্তি বৃদ্ধি পায়। কালজিরায় রয়েছে ১৫টি এ্যামাইনো এসিড। আমাদের দেহের জন্য প্রয়োজন ৯টি এসেনসিয়াল এ্যামাইনের এসিড যা দেহে তৈরি হয় না অবশ্যই খাবারের মাধ্যমে এর অভাব পূরণ করতে হয়। আর কালজিরায় রয়েছে ৮টি এসেনসিয়াল এ্যামাইনো এসিড। যদি সর্দি কাশি সারাতে এবং দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কালজিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রসূতি মাতাদের দুগ্ধ বাড়াতে ও নারীদেহের মাসিক নিয়মিত কারণে এবং মাসিকের ব্যথা নিবারণে কালজিরার ভূমিকা রয়েছে। নিয়মিত কালজিরা সেবনে চুলের গোড়ায় পুষ্টি ঠিকমত পায় ফলে চুলের বৃদ্ধি ভাল হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়। নিয়মিত অল্প পরিমাণ কালজিরা খেলে মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রক্ত সঞ্চালন ও বৃদ্ধি সঠিকভাবে হয় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে

Post a Comment

0 Comments